অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এখন আর শুধু ব্লগার বা SEO বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই বরং এটি Gen Z-দের জন্য অনলাইনে আয় করার সবচেয়ে সহজলভ্য ও ক্রিয়েটর-বান্ধব পদ্ধতি হয়ে উঠেছে। প্রবেশের সহজ সুযোগ, সৃজনশীল স্বাধীনতা এবং স্কেলযোগ্য আয়ের সম্ভাবনার জন্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং Gen Z-দের ডিজিটাল লাইফস্টাইলের সাথে দারুণভাবে খাপ খায়। আপনি TikTok-এ পোস্ট করুন, Telegram গ্রুপ তৈরি করুন কিংবা গ্রুপ চ্যাটে শুধু লিংক শেয়ার করুন—সুযোগ সব ক্ষেত্রেই রয়েছে। আপনার দরকার শুধু সঠিক পদ্ধতিতে এটিকে ব্যবহার করা এবং নিজের আয়ের পথে রূপান্তরিত করা।

Gen Z প্রজন্মের অনলাইন ব্যবহারের ধরন

প্রথমে দেখা যাক Gen Z প্রজন্ম আসলে অনলাইনে কোথায় বেশি সক্রিয় থাকে। তারা শুধু ইন্টারনেট ঘাঁটাঘাঁটি করে না, তারা কনটেন্ট তৈরি করে, রিমিক্স করে, শেয়ার করে এবং অন্যদের উপর প্রভাব বিস্তার করে। এই প্রজন্মের হাতেখড়িই হয়েছে স্মার্টফোন, YouTube, Instagram এবং বর্তমানে TikTok-এর সাথে। ডিজিটাল জগতে তাদের পারদর্শিতা একেবারে সহজাত।

কিছু নির্দিষ্ট প্রবণতা বিশেষভাবে লক্ষণীয়:

  1. 1. Gen Z প্রজন্মের চিরাচরিত বিজ্ঞাপনের প্রতি বিশ্বাস নেই। তারা সেই সকল ক্রিয়েটরদের উপর আস্থা রাখে যাদের সাথে নিজেদের মিল খুঁজে পায়।
  2. 2. তাদের পছন্দ ভিডিও, স্বল্প দৈর্ঘ্যের এবং ইন্টারঅ্যাকটিভ কনটেন্ট।
  3. 3. তারা ব্যক্তিগত চ্যানেলের প্রতি বেশি আকৃষ্ট: Telegram, Discord, গ্রুপ চ্যাট।
  4. 4. তাদের মনোযোগ সীমিত — তবে কোনো কিছু যদি তাদের মনে ধরে, তাহলে তারা সেটাতে পুরোপুরি মগ্ন হয়ে যায়।

এই বিষয়টা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারদের জন্য কী বার্তা দেয়? দীর্ঘ ব্লগ পোস্ট বা ব্যানার বিজ্ঞাপনের উপর নির্ভর করে সফল হওয়া সম্ভব নয়। আপনাকে Gen Z-দের জগতে গিয়ে তাদের ভাষায় সত্যিকারের যোগাযোগ গড়ে তুলতে হবে।

Gen Z ক্রিয়েটরদের কাছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কেন এত আকর্ষণীয়

Gen Z প্রজন্মের কাছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং স্বাভাবিক মনে হওয়ার কারণ হলো এটি তাদের নিজস্ব ছন্দের সাথে পুরোপুরি মানিয়ে যায়।

  1. 1. এতে ঝুঁকি অত্যন্ত কম। আপনার নিজস্ব পণ্য, গুদাম বা স্টার্টআপ মূলধনের কোনো প্রয়োজন নেই।
  2. 2. এটা পারফরমেন্স-ভিত্তিক। আপনার কনটেন্ট সফল হলেই আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
  3. 3. এখানে সৃজনশীলতার প্রকৃত মূল্যায়ন হয়। বুদ্ধিদীপ্ত, মজার বা তথ্যপূর্ণ কনটেন্ট স্প্যাম টাইপ বিক্রির কৌশলের তুলনায় অনেক বেশি কার্যকরভাবে কনভার্ট করে।
  4. 4. এটা নমনীয়। আপনি আপনার ব্যক্তিগত ব্র্যান্ড, মজার মিম কিংবা নির্দিষ্ট ধরনের কোনো কনটেন্টের সঙ্গে নির্বিঘ্নে অ্যাফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করতে পারেন।

যে সকল ক্রিয়েটর ব্র্যান্ড ডিল বা অ্যালগরিদমের ভরসায় থাকতে চান না, তাদের জন্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে নিজ শর্তে সরাসরি উপার্জনের একটি সহজ উপায়।

কেন Gen Z প্রজন্ম অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এত পছন্দ করে
এটা যা অফার করে
পণ্য তৈরি করার কোনো প্রয়োজন নেই
এমন প্রোডাক্ট প্রোমোট করুন যেগুলো পেমেন্ট অফার করে
কনটেন্টের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ
কোনো ব্র্যান্ড গাইডলাইন বা স্ক্রিপ্টের বাধ্যবাধকতা নেই
সম্প্রসারণযোগ্যতা
অডিয়েন্স যত বাড়বে, আয় তত বৃদ্ধি পাবে
বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে কার্যকর
TikTok, Telegram, YouTube, ব্লগ, ইত্যাদি।

Gen Z-এর কাজ সম্পর্কিত দর্শন বিবেচনা করলে দেখা যায় – নমনীয়, ডিজিটাল ও স্বাধীনভাবে চালিত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং আসলে তাদের জন্য আদর্শ সমাধান।

Gen Z প্রজন্মের জন্য উপযুক্ত অ্যাফিলিয়েট ক্ষেত্র

প্রত্যেকটা ক্ষেত্র Gen Z প্রজন্মের সংস্কৃতির উপযোগী নয়। কিন্তু কিছু নির্দিষ্ট ক্যাটাগরি একেবারে স্বাভাবিক মনে হয়:

  • ফ্যাশন এবং সৌন্দর্য। TikTok হলস, স্কিনকেয়ার রুটিন, পোশাকের বিশ্লেষণ।
  • গেমিং। স্ট্রিমার থেকে শুরু করে Discord মডারেটর পর্যন্ত, গেমিং কমিউনিটি খুব সহজেই অ্যাফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করে অর্থ উপার্জন করে।
  • ফাইনান্স লাইট। বাজেটিং টিপস, সাশ্রয়ের কৌশল, এবং ক্রিপ্টো সম্পর্কিত সহজবোধ্য ব্যাখ্যা।
  • প্রযুক্তি এবং গ্যাজেট। রিভিউ, সেটআপ, আমাজন ফাইন্ড, মাইক্রো-টুলস।
  • শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতা জার্নাল, সাপ্লিমেন্টস, মেডিটেশন অ্যাপ।
  • iগেমিং ক্ষেত্র। বিশেষ করে Telegram গ্রুপে, যেখানে সঠিক বয়স-সীমা সেটআপের মাধ্যম বেটিং টিপস, খেলাধুলার বিশ্লেষণ বা ক্যাসিনো রিভিউ শেয়ার করা হয়।

কোনটা সবচেয়ে ভালো কাজ করে? সেই সকল ক্ষেত্র যেখানে Gen Z ইতোমধ্যেই সময় ও অর্থ ব্যয় করে এবং একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করে—কোনটা ভালো, কোনটা যথার্থ এবং কোনটা প্রতারণা।

Gen Z প্রজন্মকে লক্ষ্য করে একজন অ্যাফিলিয়েট হিসাবে গৃহীত কার্যকরী স্ট্র্যাটেজি

কৌশল নিয়ে কথা বলা দরকার, কারণ এই জায়গায় পুরানো পদ্ধতিগুলো আর কাজ করবে না।

  1. 1. ছোট দৈর্ঘ্যের ভিডিওই এখন সর্বাধিক প্রভাবশালী
    TikTok, Instagram রিলস, YouTube শর্টসের ব্যাপারে ভাবুন। কনটেন্টকে ভিজ্যুয়াল ও ডায়নামিক রাখুন এবং 45 সেকেন্ডের মধ্যে শেষ করুন। আপনার অ্যাফিলিয়েট পণ্যকে যদি হাস্যকর, বুদ্ধিদীপ্ত বা দৃষ্টিনন্দন মুহূর্তের সঙ্গে মিশিয়ে উপস্থাপন করা সম্ভব হয়় — তাহলে অবশ্যই করুন।
  2. 2. স্বচ্ছতা বজায় রাখুন
    Gen Z সততাকে মূল্য দেয়। আপনি সোজাসাপ্টা বলতে পারেন, “এই লিংকের মাধ্যমে আমি উপার্জন করি” অথবা “আমি এটা এতটাই উপকারী মনে করেছি যে সবার সাথে শেয়ার করলাম।” তারা যদি আপনার ওপর আস্থা রাখে, তবে নিশ্চিতভাবেই ক্লিক করবে।
  3. 3. Telegram ও Discord-কে কাজে লাগান
    গোপন এবং চাপমুক্ত চ্যানেলগুলোতেই সত্যিকারের কনভার্সন ঘটে। অনেক Gen Z ক্রিয়েটর ফ্যাশনের অফার, গেমের আপডেট বা বেটিং টিপস নিয়ে সাজানো Telegram গ্রুপ তৈরি করে এবং খুব সহজেই সেখানেই অ্যাফিলিয়েট লিংক যুক্ত করেন।
  4. 4. সরাসরি বিক্রি না করে মানুষকে তথ্য দিন
    “এই অ্যাপ থেকে আমি কীভাবে $200 আয় করেছি তা দেখুন” — এটি “এখনই ক্লিক করুন!”-এর থেকে অনেক বেশি কার্যকর। যদি আপনার কনটেন্ট কাউকে কিছু শেখায়, উদ্বুদ্ধ করে বা সমস্যার সমাধান দেয় — তাহলে ক্লিক আপনাআপনি চলে আসবে।
  5. 5. ছোট ছোট ক্ষেত্রগুলোকে কাজে লাগান
    Gen Z প্রজন্ম গণ-বিজ্ঞাপন একদমই পছন্দ করে না। তারা চায় প্রাসঙ্গিকতা। আপনার যদি ইন্ডি হরর গেম, পুরনো ধাঁচের স্নিকার্স বা জার্নালিংয়ের প্রতি আগ্রহ থাকে, তাহলে সেখানেই মনোনিবেশ করুন। নিশ্চিত লক্ষ্যভিত্তিক কনটেন্টই বিশ্বাস গড়ে তোলে — আর এই বিশ্বাসই অ্যাফিলিয়েটদের উপার্জন বাড়িয়ে তোলে।
  6. 6. একটি নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের কথা মাথায় রেখে কনটেন্ট তৈরি করুন
    “ব্র্যান্ড” হওয়া জরুরি নয়, কিন্তু যদি নিয়মিত উপার্জন করতে চান তাহলে একটি পরিচিত ধারা বা থিম থাকা দরকার। যদি আপনি পরিকল্পিতভাবে পোস্ট করেন এবং ট্রাফিক পরিচালনা করেন, তবে এলোমেলো স্টাইলও কৌশলগত হতে পারে।
  7. 7. একাধিক প্ল্যাটফর্মে পরীক্ষা করে দেখুন
    TikTok আপনাকে বেশি রিচ দিতে পারে, কিন্তু Telegram থেকে কনভার্সন বেশি আসবে। কয়েকটি চ্যানেল একসাথে ব্যবহার করুন, কোন লিংক বেশি পারফর্ম করছে তা পর্যবেক্ষণ করুন এবং সেই অনুযায়ী আপনার প্রচেষ্টা চালিয়ে যান।

Telegram শুধু চ্যাটের অ্যাপ নয় – এটি অর্থ উপায়ের যন্ত্র

অনেকেই এখনও Telegram-কে একটি সাধারণ মেসেজিং অ্যাপ হিসেবেই দেখে — এটা সত্যিই মজার ব্যাপার। Gen Z প্রজন্মের কাছে এটি সম্পূর্ণ বিপরীত। এটাই সেই প্ল্যাটফর্ম যেখানে আসলেই কমিউনিটি আছে। যেখানে বিশ্বাসের ভিত গড়ে ওঠে। আর একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারের জন্য? এখানেই অর্থ আসে নীরবে, ধারাবাহিকভাবে এবং ভাইরাল হওয়ার কোনো প্রয়োজন ছাড়াই।

আপনি Telegram খুললেই দেখতে পাবেন একটি বেটিং টিপস চ্যানেলে 3,200 জন সদস্য রয়েছে। এখানে ঝাঁ-চকচকে সাজসজ্জা নেই। সেখানে থাকে মিম, ঝাপসা স্ক্রিনশট, কখনও কখনও ভুল বানানও। কিন্তু এটাকে সত্যি মনে হয়। এটাকে নিজের বলে মনে হয়। আপনার মনে হবে চ্যানেলের পিছনের ব্যক্তিটি সত্যিই খেলা দেখে এবং নিজ অভিজ্ঞতা থেকে পরামর্শ দেন। ফলে যখন সে হালকা ভাবে বলে “এটা চেষ্টা করুন, আমি গত সপ্তাহে ভালো বোনাস পেয়েছিলাম” আর সাথে লিংক শেয়ার করে, তখন লোকজন ক্লিক করতে দ্বিধা করেন না।

ওটাকেই ক্ষমতা বলে। Telegram অপ্রয়োজনীয় বিভ্রান্তি থেকে দূরে থাকে। প্রতিটি পোস্টেই অ্যালগরিদমের সাথে লড়াই করার ঝামেলা এখানে নেই। এখানে ব্যাপারটা হ্যাশট্যাগ বা এনগেজমেন্ট রেটের উপর নির্ভর করে না। এর চেয়েও বড় কথা হলো, এটা আপনি এবং আপনার কমিউনিটির মধ্যে এমন এক ডিজিটাল আলাপচারিতা, যা দেখতে সাধারণ মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে সেটাই মার্কেটিং। কিছু চ্যানেল একদম প্রাণবন্ত — লাইভ গেম্বলিং স্ট্রিম, ম্যাচ চলার সময় ভয়েস মেসেজ, ভোটাভুটি এবং ছোট ছোট প্রতিযোগিতায় ঠাসা। কিছু চ্যানেল অনেকটাই নীরব: প্রতিদিন শুধু কয়েকটি লিংক, মাঝে মাঝে একটি উদ্ধৃতি বা একটি ভয়েস নোট। উভয়ই কার্যকর, যদি আপনার গ্রাহক সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকে।

সেরা ব্যাপারটা কী জানেন? বাধা দেওয়ার কেউ নেই। আপনার যাচাইকৃত হবারও কোনো প্রয়োজন নেই। আপনার বিজ্ঞাপন কেনারও কোনো প্রয়োজন নেই। আপনার পোস্ট পড়ে যদি 10 জনের মধ্যে 2 জন আপনার অ্যাফিলিয়েট লিংকে ক্লিক করে, তার মানেই আপনি এগিয়ে চলেছেন। এটাই সম্ভাবনার সূচনা। Gen Z-দের এটা বোঝার ক্ষমতা সহজাত। লোক দেখানো ফলোয়ার বাড়ানোর পিছনে তারা সময় নষ্ট করে না। তারা গ্রাহকদের ছোট ছোট দল তৈরি করছে এবং সেটাকেই আয়ে রূপান্তর করছে। এটা নীরব, বুদ্ধিদীপ্ত এবং বাজারের বেশিরভাগ ঝকঝকে ইনফ্লুয়েন্সারদের কৌশলের থেক়ে বেশি কার্যকর।

Telegram অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং-এর ভবিষ্যৎ নয়। Gen Z-দের জন্য এটা ইতোমধ্যেই বর্তমান — এবং এটি সূচনা মাত্র।

একজন Gen Z ক্রিয়েটর হিসেবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্প্রসারণ করা: এর পরের ধাপগুলো কী কী?

প্রথমবার কমিশন পেলেই Gen Z অ্যাফিলিয়েটদের মানসিকতা একেবারে পাল্টে যায়, যদি সেটা $30-ও হয়, তাহলেও। এটা তখন আর শুধু একটি ছোটখাটো সাইড ইনকাম থাকে না। এটা তখন একটি সম্প্রসারণযোগ্য সিস্টেম হয়ে যায়। তাহলে এটার বিস্তার ঘটাবে কীভাবে?

  1. 1. উপার্জিত অর্থ পুনরায় বিনিয়োগ করুন
    সপ্তাহে $100 আয় হলে আপনি আরও ভালো ভিজ্যুয়াল, উন্নত সাউন্ড বা নির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক পেইড প্রোমোতে বিনিয়োগ করতে পারবেন। যে সকল Gen Z ক্রিয়েটর অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং-কে চিরাচরিত আয়ের উৎস নয়, বরং একটি স্টার্টআপের মতো দেখে, তারা 5x দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
  2. 2. অন্যান্য ছোট ছোট ক্রিয়েটরদের সাথে একসাথে কাজ করুন
    যখন ক্রিয়েটররা একে অপরকে প্রোমোট করে, তখন অ্যাফিলিয়েট লিংক আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যায়। Telegram-এ শেয়ার করা, Instagram-এ সহযোগিতা কিংবা TikTok-এ “ডুয়েট”—সব ক্ষেত্রেই Gen Z নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে নিজেদের প্রসার ঘটায়। যদি দুইজন ক্রিয়েটরের ক্ষেত্র একইরকম হয় (ধরুন, বেটিং টিপস এবং ফুটবল ধারাভাষ্য), তাহলে তাদের গ্রাহক স্বাভাবিকভাবেই মিশে যায় — এবং লিংক নতুন দর্শকদের কাছে পৌঁছে যায়।
  3. 3. একাধিক ভাষার প্রয়োগ
    Gen Z-দের সংযোগ বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত। আপনি যদি দুই বা ততোধিক ভাষায় দক্ষ হন, তাহলে সহজেই আপনার গ্রাহকের পরিসর দ্বিগুণ করতে পারবেন। বর্তমানে অনেক ক্রিয়েটর একটি কনটেন্ট ইংরেজিতে এবং অন্যটি ফ্রেঞ্চ, স্প্যানিশ বা আরবি ভাষায় প্রকাশ করেন। অনেক Telegram অ্যাডমিন বিভিন্ন ভাষায় একাধিক গ্রুপ পরিচালনা করেন — যেখানে প্রতিটি গ্রুপে ভিন্ন লোকালাইজড অ্যাফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করা হয়।
  4. 4. দীর্ঘমেয়াদে প্রাসঙ্গিক এমন কনটেন্ট তৈরি করুন
    TikTok-এর ট্রেন্ডিং কনটেন্ট খুব অল্প সময়েই হারিয়ে যায়। তবে “2025-এ আমাকে পেমেন্ট দেওয়া সেরা 3টি বেটিং অ্যাপ” বা “Telegram থেকে আমি কীভাবে $500 আয় করেছি” এই ধরনের কনটেন্ট দীর্ঘ সময় ধরে ট্রাফিক আনতে সক্ষম — এবং ভালোভাবে অপ্টিমাইজ করলে আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। Gen Z প্রজন্ম এখন বুঝে গেছে যে সকল সফলতা ভাইরাল হওয়ার উপর নির্ভর করে না। কিছু বিষয় যুগান্তকারী হওয়া প্রয়োজন।
  5. 5. কাস্টম ডিল নিয়ে আলোচনা করুন
    অ্যাফিলিয়েট প্ল্যাটফর্মগুলো স্থবির নয়। আপনি যদি প্রকৃতপক্ষেই ট্রাফিক জেনারেট করেন, তাহলে নির্দ্বিধায় আপনার ম্যানেজারকে মেসেজ করে এগুলো চাইতে পারেন:
  • উচ্চতর revshare।
  • কাস্টম প্রোমো কোড।
  • বোনাসে দ্রুত অ্যাক্সেস
  • অঞ্চল-ভিত্তিক ল্যান্ডিং পেজ।

Gen Z-এর সঙ্গে কাজ করা প্ল্যাটফর্মগুলো এই বিষয়টা ভালোই বোঝে এবং দ্রুত সাড়া দেয়। তারা জানে Gen Z অ্যাফিলিয়েটরা চটপটে, সৃজনশীল এবং নিজের কমিউনিটির সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক তৈরি করতে সক্ষম।

তাহলে, Gen Z আসলে কীভাবে অ্যাফিলিয়েট আয় বৃদ্ধি করে?

প্রথম $20 অ্যাকাউন্টে আসার পর থেকেই সবকিছু বদলে যায়। হঠাৎ করেই এটা আর “স্রেফ বায়োতে দেওয়া একটা লিংক” থাকে না — বরং এটা প্রমাণ হয়ে দাঁড়ায় যে এই পদ্ধতিটি সত্যিই কার্যকর।

Gen Z অ্যাফিলিয়েটদের সাফল্যের রহস্য কোনো টুলস বা ট্রিকসে নয়, বরং তারা সেই প্রাথমিক ক্ষুদ্র সাফল্যকে কীভাবে মূল্যায়ন করে, সেটাতেই। তারা দ্বিগুণ প্রচেষ্টা চালায়। তারা অত্যধিক ভাবনাচিন্তা করে না। এর পাশাপাশি, তারা আরও বেশি পোস্ট করে। এর পাশাপাশি, তারা পরীক্ষানিরীক্ষা করে। তারা আর নিখুঁত হওয়ার পিছনে সময় নষ্ট করে না, বরং নিয়মিত সক্রিয় থাকতে শুরু করে। আপনি Telegram গ্রুপে এটা দেখতে পাবেন — কেউ এমনিই বলবে, “শুধু দুইটা প্রোমো থেকে গত সপ্তাহে $70 আয় করেছি,” আর বাকিরা বলবে, “সিরিয়াসলি? কীভাবে?” এইভাবেই সাফল্যের ঢেউ ওঠে।

কেউ কেউ পুরোপুরি মনোযোগ দেয় কনটেন্ট এডিটিংয়ের উপর, আরও উন্নত মানের শর্ট ভিডিও তৈরি করে, ভালোভাবে ফোনে ভিডিও বানায়। অনেকে বাস্তব কমিউনিটি গড়ে তোলে: স্পেসিফিক ক্ষেত্রের Telegram চ্যানেল, ঘনিষ্ঠ Discord গ্রুপ, বা প্রাইভেট চ্যাট — যেখানে “লিংকে ক্লিক করো” ধাঁচের কথাবার্তার থেকে “দেখো, দারুণ কিছু পেয়েছি” ধরনের কথাবার্তা বেশি হয়।

তারা বুঝতে শুরু করে কোন ধরনের কনটেন্টে তাদের অডিয়েন্স সবচেয়ে বেশি প্রতিক্রিয়া দেখায়। তারা অন্যের করা কাজ কপি কররা বদলে নিজস্ব সংস্করণ, নিজস্ব স্টাইল, নিজস্ব ফিড তৈরি করতে শুরু করে। আর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারটি হলো তারা ধারাবাহিকভাবে সক্রিয় থাকে। কোনো পোস্ট ফ্লপ হলেও। যদি সেই সপ্তাহে কোনো ক্লিক না আসে তাহলেও। কারণ তারা বোঝে যে পরবর্তী প্রচেষ্টাটিই হয়তো বড় সাফল্য এনে দেবে। Gen Z প্রজন্মের কাছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং মানে শুধু ফানেল, নির্দিষ্ট ফর্মুলা বা কোনো কোর্স নয়। এটা একটা ছন্দ। এর মানে হলো পরীক্ষা করা, শেয়ার করা, মজা করা, লিংক শেয়ার করা এবং বারবার চেষ্টা করা। আর এটাই এর সফলতার রহস্য।

কেন অনলাইনে উপার্জন করার ক্ষেত্রে Gen Z প্রজন্মের জন্য কোনো প্রচলিত ক্যারিয়ার বাধ্যতামূলক নয়

Gen Z প্রজন্মের অধিকাংশই “সাধারণ চাকরি”-কে আর কোনো লক্ষ্য বলে মনে করে না। ওদের কাছে এটা এক ধরনের বন্দিদশা। 9টা-5টা চাকরি, বাঁধাধরা সময়সূচি আর ম্যানেজারের পর ম্যানেজারের নিয়ন্ত্রণ — এগুলো তখন অর্থহীন মনে হয়, যখন আপনি দেখেন যে আপনার আশেপাশের মানুষরা শুধু ফোন আর ইন্টারনেট দিয়েই উপার্জন করছে।

এই মানসিকতার সঙ্গে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং একদম মানানসই। কারণ এটা “সহজ টাকা” বলে নয় — আসলে তা নয় — বরং এটি আপনাকে নিজের কিছু তৈরি করার স্বাধীনতা দেয়, কাউকে জিজ্ঞেস করার দরকার পড়ে না। আপনাকে ব্র্যান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য অনুরোধ করতে হয় না। আপনার লক্ষ লক্ষ ফলোয়ারের প্রয়োজন নেই। আপনার বড় শহরে বসবাস করার বা দুর্দান্ত বায়োডাটা থাকার কোনো প্রয়োজন নেই। আপনার প্রয়োজন শুধু নিজস্ব বক্তব্য, একটু ধারাবাহিকতা এবং চেষ্টা করার সাহস।

এখন যা বদলে গেছে তা হলো, Gen Z “প্রকৃত চাকরি” আর “অনলাইন কাজ” আলাদা করে দেখে না। Gen Z-এর কাছে Telegram-এ অ্যাফিলিয়েট লিংক শেয়ার করে সপ্তাহান্তে $300 আয় করাও একদম বৈধ উপার্জন — বরং খুচরা দোকানে শিফটে কাজ করার চেয়েও বেশি গ্রহণযোগ্য। এবং এটাই হওয়া উচিত। আপনি এখনো সমস্যার সমাধানে ব্যস্ত। আপনি এখনো বিশ্বাস অর্জনে ব্যস্ত। আপনি শুধু সেটা করছেন ডিজিটাল দুনিয়ায়, যেখানে লাভের ভাগীদার শুধুই আপনি। বেশিরভাগ মানুষ ডিগ্রি, ইন্টার্নশিপ বা পদোন্নতির জন্য বছরের পর বছর অনুমতির অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু Gen Z বড় হয়েছে “স্কিপ অ্যাড” ক্লিক করতে করতে। তারা অপেক্ষা করে না। তারা গড়তে ব্যস্ত।